তারকার জন্মদিন মানেই আলো-ঝলমলে পার্টি, ঝাঁকঝমক অনুষ্ঠান! কিন্তু টলিপাড়ার জনপ্রিয় মুখ, সমাজসেবিকা ও পশ্চিমবঙ্গের ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর প্রেসিডেন্ট পায়েল মিঠাই সরকার তার বিশেষ দিনটিকে বেছে নিলেন অন্যভাবে। জন্মদিন যেন রূপ নিল মানবসেবার উৎসবে।

৫ই সেপ্টেম্বর রাত পেরিয়ে ৬ই সেপ্টেম্বরের প্রথম প্রহরে দমদমের এক প্রতিবন্ধী শিশু সংগঠনে পৌঁছে যান পায়েল। প্রায় ১৫০ জন শিশুর সঙ্গে কেক কাটেন, হাতে তুলে দেন চকলেট, ফল আর নানা উপহার। শিশুদের মুখে হাসি ফোটানো দিয়েই শুরু হয় দিন।
ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধাশ্রম
সকালে শ্যাম মন্দিরে পূজা দিয়ে দিন শুরু করেন তিনি। এরপর পৌঁছান ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালে। সেখানে ১৪০ জন ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর সঙ্গে কেক কেটে আনন্দ ভাগ করে নেন। শিশুদের হাতে তুলে দেন ড্রাই ফ্রুট এবং কিছু সময় কাটান তাদের পাশে।

এরপর তিনি যান কলকাতার জনপ্রিয় বৃদ্ধাশ্রম ‘নিভালয়’-এ। সেখানে ২০ জন প্রবীণের সঙ্গে কেক কাটেন এবং নিজ হাতে তাদের মধ্যাহ্নভোজন করান। উপস্থিত ছিলেন পায়েল সরকার অর্গানাইজেশন প্রাইভেট লিমিটেড-এর বোর্ড ইন-চার্জ ও এক টাকা পাঠশালা-র প্রতিষ্ঠাতা শ্রীকান্ত বধূক।

সাগরদিঘীতে একের পর এক কর্মসূচি
শুধু কলকাতাই নয়, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘীতেও পালিত হয় নানা কর্মসূচি। সাগরদিঘী উইনার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট সকালে বৃক্ষরোপণ দিয়ে সূচনা করে। পরে বিষ্ণুডাঙ্গা আজিমুন্নেসা প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতে খাতা, কলম, রুলার, জ্যামিতি বক্স, জলের বোতল সহ পড়াশোনার সামগ্রী ও চারাগাছ তুলে দেওয়া হয়।
দুপুরে আদিবাসী শিশুদের সঙ্গে বিশেষ ভোজ এবং রাতে সাগরদিঘী রেলস্টেশন চত্বরে পথবাসীদের হাতে খাবার বিতরণ করা হয়।
এই সমস্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টের সম্পাদক সঞ্জীব দাস, সদস্য রাহুল ভকত ও নূর হাসান। সহযোগিতা করে ‘বিষ্ণুডাঙ্গা কল্যাণের পথে’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

প্রশংসায় ভরল জন্মদিন
প্রকৃতিপ্রেমী ও রক্তযোদ্ধা সঞ্জীব দাস বলেন—
“পায়েল মিঠাই সরকার শুধু পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রীই নন, সমাজসেবার ক্ষেত্রেও তিনি এক অনুপ্রেরণা। আমাদের ট্রাস্টের অগ্রগতিতে তার অবদান অনস্বীকার্য। জন্মদিনে আমরা সবাই তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।”

সমাপ্তি
সব মিলিয়ে, পায়েল মিঠাই সরকারের জন্মদিন শুধুই এক তারকার দিন ছিল না—এ যেন অসহায় শিশু, প্রবীণ আর পথবাসীদের মুখে হাসি ফোটানোর উৎসব। পর্দার বাইরেও তার এই মানবিক রূপ ছুঁয়ে গেল অসংখ্য মানুষের হৃদয়।
