বিশ্বের সবচেয়ে আজব শহর এলাস্কার হুইটিয়ার।
হুইটিয়ার এই বিল্ডিংটিতে চাহিদার সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র একই ছাদের নিচে জড়ো করা হয়েছে। এখানে মানুষ শুধু লিফটে যাত্রা করে মুদির দোকান থেকে শুরু করে পোস্ট অফিসে এমনকি নোটারি অফিসেও যেতে পারে। বাইরে ভীষণ ঝড় ও তুষারপাত থাকা সত্ত্বেও এই বিল্ডিংয়ে বসবাসকারী বাচ্চারা তাদের ভূগর্ভস্থ ট্যানেল দিয়ে স্কুলে যায়। এটি এলাস্কার দক্ষিণে অবস্থিত। হুইটিয়া মূলত একটি উপকূলীয় শহর। যা উচু উঁচু পাহাড় এবং সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত। এটি আনুমানিক ৫১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। এখানকার জনসংখ্যার জন্য শুধুমাত্র একটি আবাসিক এলাকায় রয়েছে।
হুইটিয়াদের বিল্ডিংয়ে, তাদের করিডরে হাটা মনে তাদের প্রতিবেশীদের রাস্তায় হাঁটা। বাইরে থেকে এই শহরে যাওয়ার জন্য একটি মাত্র সুরঙ্গ রয়েছে। এই সুরঙ্গটি মূলত ট্রেন চলাচলের জন্য চালু করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এটা সব ধরনের গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। তবে জানলে অবাক হবেন ট্রেন যাওয়ার পর খুব দ্রুত গাড়ি চলাচল করে কারণ পরবর্তী ট্রেন আসার সময় হলে আবার গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি সাইকেল এবং সাধারণ পথচারীদের এই গুহার ভেতর দিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ।

এটা মূলত একটি বন্দর কেন্দ্রিক শহর। এই এলাকার বাসিন্দারা মূলত মাছ ধরার কাজেনিযুক্ত থাকেন। প্রায় সারা বছরই এখানে তুষারপাত হয়। এবং কিছু সময় তো এমনই পরিস্থিতি হয় যে এ বিল্ডিং থেকে বাইরে বেরোনোর সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে। ১৯৫৬ সালে এ বিল্ডিংটি নির্মাণ করা হয়েছিল মূলত মার্কিন সেনাবাহিনীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে। ১৪ তলা বিল্ডিং এর মোট ১৯৬ টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। ১০০০ জন লোকের জন্য থাকার জায়গা রয়েছে। এই বিল্ডিং এর ভেতরে রয়েছে একটি মুদি দোকান। একটি লন্ড্রি সপ। একটি স্টোরেজ এলাকা।
আরও পড়ুনঃ- জীবনে নিশ্চিতভাবে সফল হওয়ার ৩ টি সিক্রেট কৌশল
বাচ্চাদের জন্য রয়েছে একটি খেলার মাঠ। দুটো গির্জা। পৌরসভার অফিস। ট্যানেল দ্বারা যুক্ত একটি স্কুল। একটি পোস্ট অফিস এমনকি একটি নোটারি অফিস ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এখানে। শীতের সময় এখানকার মানুষ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই বিল্ডিং এর মধ্যেই অবস্থান করে। এটা যেন একটি ছোট বাজার যেখানে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাবেন।

বাইরে থেকে এটিকে একটি মাত্র বিল্ডিং বলে মনে হলেও এটি মূলত পৃথক তিনটি বিল্ডিং নিয়ে গঠিত। যেগুলো পাশাপাশি থাকার কারণে একটি বিল্ডিং বলে মনে হয়।বর্তমানে এই বিল্ডিংয়ে মোট ৩০০ লোক বসবাস করে। আপনি চাইলে একজন পর্যটক হিসেবে এখান থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। এখানে বিভিন্ন দেশের লোক বসবাস করেন আমেরিকা থেকে শুরু করে ফিলিপিন সব দেশের লোকই এখানে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ- ভারতের চন্দ্রযান থ্রী মিশন দেখে হিংসায় জ্বলছে বাংলাদেশের কিছু মানুষ
এমনকি এই বিল্ডিং একটি পুলিশ স্টেশন রয়েছে। এখানে অপরাধ করলে একজন বাসিন্দা কে গ্রেফতার করে তার নিজস্ব ভবনের মধ্যেই কারাগারে বন্দি রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে।এই শহর থেকে কেউ অপরাধ করে পালাতে পারেন না। কারণ এখান থেকে পালানোর দুটো রাস্তা একটি হচ্ছে এই সুরঙ্গ যা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর খোলে অপরটি হচ্ছে সমুদ্র। যেহেতু দুটোই দীর্ঘ সময়ের পথ তাই এখান থেকে পালানো কোনভাবেই সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ- ৯০ এর দশকে সকলের পছন্দের বিস্কুট ছিল “পার্লে-জি”